Bangla suspense horror story: বাংলা বাছাই করা ভুতের গল্প, সংলাপ আকারে

Bangla suspense horror story: বাংলা বাছাই করা ভুতের গল্প

গল্প: অদৃশ্য প্রেম

লেখক – DK

**দৃশ্য: **

একটি বাসস্টপ ২০24 সালের একটি ঠান্ডা সন্ধ্যা। আকাশে কালো মেঘ। বাসস্টপে বিজয় দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে নীরবতা। হঠাৎ প্রবল বজ্রপাত। বিজয় তার চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসে।

বিজয় (মনে মনে): কলকাতায় আসার পর থেকেই যেন সবকিছু অন্যরকম লাগছে। এত ঠান্ডায় বাসস্টপে দাঁড়িয়ে থাকা সত্যিই কষ্টকর। আজ কি কোনো বাস আসবে? নাকি এই রাতটাও এখানেই কাটাতে হবে?

(বিজয় তার পেছনে কিছু আওয়াজ শুনে ঘুরে তাকায়।)

বিজয়: (মেয়েটির দিকে তাকিয়ে) এত রাতে আপনি একা? এইরকমআবহাওয়ায় বাইরে থাকা মোটেও নিরাপদ নয়। আপনার বাড়ি থেকে কাউকে ডেকে নেওয়া উচিত ছিল।

দিশা: মনে হয় না আজ রাতে আর কোনো বাস আসবে। আপনাকে তো এখানকার মনে হয় না! আপনি কোথায় থাকেন?

বিজয়: হ্যাঁ, আমি নবদ্বীপে থাকি। UPSC কোচিংয়ের জন্য এখানে এসেছি। থাকার জন্য রুম খুঁজতে খুঁজতে দেরি হয়ে গেল।

দিশা: তাহলে এখন কোথায় যাবে?

বিজয়: দেখি… স্টেশনের পাশে কোনো লজে ব্যবস্থা করে নেব।

দিশা: আপনি চাইলে আমার সোসাইটিতে রুম খালি আছে, থাকতে পারেন।

বিজয়: ওকে। আপনার ফ্ল্যাট কত দূর?

দিশা: এখান থেকে একটু গেলেই আমার ফ্ল্যাট।

বিজয়: এত রাতে যাওয়া ঠিক হবে তো?

দিশা: কলকাতায় রাত হয় না।

বিজয়: কাছেই যখন, তাহলে আপনি এখানে কী করছেন?

দিশা: বন্ধুদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ও বোধহয় আজ আর আসবে না।

বিজয়: এত রাতে যাওয়া ঠিক হবে তো? দিশা: কলকাতায় রাত হয় না, আর তাছাড়া তুমি কি মেয়ে নাকি? তাছাড়া রাতে বাসস্টপে একা থাকা ঠিক হবে না। সামনেই কবরস্থান, অনেকেই এখানে অদ্ভুত কিছু লক্ষ্য করেছে। তুমি কি কখনও মাঝ রাতে কারও উপস্থিতি অনুভব করেছো?

 

 

বিজয়: (মুচকি হেসে) আপনিও না… এসব কথা বলার সময় পেলেন না? (বিজয় কিছুক্ষণ ভাবে, তারপর মেয়েটির সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে।)

**দৃশ্য :২**

কিছুদূর হাঁটার পর তারা একটি পরিত্যক্ত সরকারি কলোনির সামনে এসে পৌঁছায়। কলোনির বড় লোহার গেট। চারপাশে অন্ধকার।

বিজয়: আপনি এখানে থাকেন? কলোনিটা বেশ পুরোনো আর  জায়গাটা বেশ ভুতুড়ে দেখাচ্ছে।

দিশা: (হাসি) হ্যাঁ। এখানে বেশ কিছু ঘর খালি আছে।

(দিশা বিজয়কে একটি ঘরে নিয়ে যায়। ঘরটি পুরোনো কিন্তু পরিষ্কার।)

পুরো কলোনিটা অন্ধকারে ডুবে ছিল আর নিঝুম ছিল, শুধু ঝি ঝি পোকার ডাক সোনা যাচ্ছিলো.

দিশা: তুমি এই ঘরটায় থাকতে পারো। আমি সামনের দুটো রুম পরে থাকি । আজকের রাতের জন্য তুমি এখানেই থাকতে পারেন।

বিজয়: (উদ্বিগ্ন) ঠিক আছে। ধন্যবাদ।

বিজয় দিশাকে হাত দেখিয়ে ৩ নো ঘরের দরজা খুলে ঘরের ভেতরে ঢোকে। আর যখনি লাইট ON করে তখনি ওর সামনে দিশাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে ওঠে

বিজয়: দিশা তুমি? তুমি চলে গেছিলে না? ভেতরে কিকরে আসলে?

দিশা: আরে তোমার সাথেই তো ভেতরে এলাম। অন্ধকারে দেখতে পাওয়নি হয়ত। আচ্ছা শোনো, এখানে একটা বেড ও আছে তুমি চলে এটা ব্যবহার ক্যরতে পারো। ঠিক আছে সকালে দেখা হবে। চললাম.

বিজয়: ঠিক আছে।

(বিজয় কখনো ভাবতে পারেনি যে এইরকম একটা অচেনা শহরে কোনো সুন্দর মেয়ে পেয়ে যাবে আর সে তাকে এতো সাহায্যও করবে ভাবতেও পারেনি. এসব ভাবতে ভাবতে বিজয় বিছানায় শুয়ে পরে. পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার কিছুক্ষন পরেই দিশা ওর ঘরে আসে

দিশা: তুমি কোচিং থেকে সোজা এখানে আস্তে পারো, এখন তুমি এখানেই থাকতে পারো, কেউ তোমাকে এখন থেকে বের করতে পারবে না।

বিজয়: কিন্তু ভাড়া ?

দিশা: ফ্লাট আমার এক পরিচিতর, তুমি চাইলে ভাড়া আমাকে দিয়ে দিতে পারো, আমি দিয়ে দেব।

বিজয়ের জন্য একটা সুন্দর মেয়ের ওর জন্য এতো কেয়ার, খুব ভালো লাগছিল।

 

দিশা: আমি ব্যাংকের জন্য কোচিং করি, দুপুরে ঘন্টা দুয়েক থাকি না, এরপর তুমি ঝখন চাও দেখা করতে আস্তে পার। আমার ফ্লাট নম্বর ৬। একটা কথা মনে রেখো এখানে আউট সাইডার এলাও নেই, কখনো কোনো বাইরের অজানা লোককে এখানে নিয়ে এস না। আর হা কলোনির অন্নান্ন লোকেদের ডিস্টার্বেন্স একদম পছন্দ না, তাই কারো দরজায় গিয়ে টোকা মেরো না।

বিজয়: ওকে

**দৃশ্য :৩**

বিজয়ের এই জায়গাটা বেশ ভালোই লাগছিলো, আর মেয়েটাকে তো বিজয় নিজের মনের ভেতরে জায়গা দিয়ে দিয়েছিল।

বিজয়ের ফ্ল্যাট (প্রতিদিন সকালে দিশা বিজয়কে একটি হাতের লেখা “গুড মর্নিং” নোট দিয়ে শুভ সকাল জানায়। ওরা দুজন প্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে গল্প করতো আর নিজেরদের ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা বলতো

দিশা: (হেসে) বিজয়, কলকাতা কেমন লাগছে ?

বিজয়: (হাসি) তোমার মতো কাউকে পেয়ে সব সহজ মনে হচ্ছে। তবে এই কলোনিটা ভীষণ অদ্ভুত। এত নীরব কেন? কলোনির বাকি ফ্ল্যাটগুলো কি খালি নাকি? কখনো কোনো আওয়াজ সোনা যায় না, কাউকে যেতে আসতেও দেখি না।

দিশা: (গম্ভীর) কেন তোমার কি এখানে ভালো লাগছে না? বাকি লোকেদের কথা কেন বলছো? তোমাকে বলেছিলাম না এখানকার লোকেরা ডিস্ট্যুর্বেন্স পছন্দ করে না তাই বেশিরভাগ লোক ঘরের ভেতরেই থাকে বেশিরভাগ সময়। সবাই ঝামেলা পছন্দ করে না। তাই চুপচাপ থাকে।

(বিজয় দিশার আচরণ লক্ষ করে। অন্য লোকেদের কথা বলতেই দিশার হাবভাব কেমন যেন বদলে গেছে। মনে মনে সন্দেহ তৈরি হয়।)

বিজয়: না না খারাপ লাগার কথা বলছি না, তুমি আছো তো। ব্যাস এমনিই জিজ্ঞাসা করলাম।

দিন যত যেতে থাকে বিজয় ততই দিশার কাছা কাছি আস্তে থাকে

আরো দেখুন :ঘর ছুট  https://youtu.be/P4YpPcNKce4

**দৃশ্য: ৪**

একটি সন্ধ্যা (বিজয় ও দিশা একটি বারান্দায় বসে কথা বলছে।)

বিজয়: (নরম স্বরে) তুমি আমার থেকে দুটো ফ্লাট দূরে থাকো কিন্তু এখন এই দূরত্বও আর সহ্য হচ্ছে না। তুমি কি আমাকে ভালো বাসো?

দিশা: অনেক ভালোবাস। তুমি চিন্তাও করতে পারবে না আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি। তোমাকে পাওয়ার জন্য তোমাকে পাওয়ার জন্য যে কোনো সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারি।

বিজয়: (খুশি হয়ে) সত্যি বলছো? 

 দিশা: (অদ্ভুতভাবে) ভেবে দেখো, ভালোবাসলে যে কোনো সীমানা পার করতে হবে। তানাহলে আমার বন্ধুই ঠিক আছে

বিজয়: নাও সমাধান তো হয়েই গেল। তাহলে আলাদা আলাদা ফ্লাট কেন ? আমরা তো একসাথে থাকতে পারি।

দিশা বিজয়ের কাঁধে মাথা রেখে বসে ছিল আর বিজয় দিশাকে আদর করছিলো, তখনি বিজয় দেখলো দূরে একটা বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে একজন ওদের দেখছিলো

(হঠাৎ দূরে একটি লোক বিজয় ও দিশার দিকে তাকিয়ে থাকে।)

বিজয়: (অস্বস্তি) দিশা, বিজয়: চলো নিচে চলো, কেন জানি না যখনি তোমার সাথে এখানে বসে কথা বই, তখনি ওই লোকটা ছাদে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। জানি না, এ কি মানুষ নাকি ভুত ? এমনভাবে কোনো মানুষ দেখতে পারে আমার তো মনে হয়না। তুমি সাবধানে থেকো। এই লোকটাকে আমার মোটেই সুবিধার মনে হচ্ছে না।

দিশা: (চুপচাপ) চিন্তা করো না। তুমি নিশ্চন্ত থাকো ওই লোকটা আমাকে কিছু করবে না। এখানে এটাই স্বাভাবিক।

বিজয়ের কথামতো দিশা ওর ফ্ল্যাটেই শিফট হয়ে যায়। ওরা লিভ ইন এ থাকতে শুরু করলো। দুজনে একে ওপরের সাথে খুবা খুশি ছিলো।

আরো দেখুন : আত্মহত্যা ¡ https://youtu.be/VNXYMQubovU

**দৃশ্য :৫**

মোহন: আরে বিজয় তুই কোচিং এর পরে কোথায় গায়েব হয়ে যাস। তোকে আর খুঁজেই পাওয়া যায় না। একবছর হতে চললো , আমাদের সাথেও তো কিছু সময় কাটাতে পারি। আমরা কি এতটাই খারাপ যে আমাদের সাথে থাকা যায় না ?

বিজয়: আসলে দিশার কোচিং দুপুরেই শেষ হয়ে যায়, আমরা জন্য সারাদিন অপেক্ষা করতে থাকে, একা একা বোর হয়ে যায় তাই আমিঃ তাড়াতাড়ি ঘরে চলে যাই।

মোহন: দিশা? মানে তুমি কি বিবাহিত?

বিজয়: অরে না আমি বিয়ে করিনি। দিশা আমার গার্ল ফ্রেন্ড। আমার দুজন একসাথেই থাকি।

ও ভাই , কি শোনালে? বিয়ের আগেই এক সাথে থাকছো? তাহলে বৌদিকে তো একবার দেখতে যেতে হয়। আমাদের মতো বেকার ছেলেকে এতো বিশ্বাস ? একবার তো বৌদির সাথে আলাপ করতেই হয়।

মোহনের কথা শুনে বিজয় ওকে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে রাজি হয়। োহনের কথা শুনে বিজয় ওকে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে রাজি হয়। 

আরো দেখুন : বিষাক্ত রহস্য  https://youtu.be/jsUgKtVinhg

 **দৃশ্য: ৬**

মোহনের আগমন (একদিন বিজয়ের বন্ধু মোহন কলোনিতে আসে। কলোনির অবস্থা দেখে অবাক হয়ে যায়।)

কলোনির গেটে পৌঁছে মোহন দেখা একটা পুরানো ভাঙা চোরা বিল্ডিং দাড়িয়ে আছে। কলোনির ভেতরে যাবার জন্যএকটা গেট আছে , সেটি আগাছায় ভরা। আধ খোলা জং পড়া লোহার গেট দিয়ে ঢুকে মোহন চারিদিক দেখতে থাকে।

মোহন: তুমি এই কলোনিতে থাকো? আমার সাথে ইয়ার্কি করছো তাইনা ? এইরকম ইয়ার্কি করার জন্য কি আমাকেই পেলে তুমি?

বিজয়: না মোহন, আমি তোমার সাথে ইয়ার্কি করবো কেন? সত্যিই আমি এই কলোনিতে থাকি।

মোহন: আমি যতদূর জানি , গত ৫/৬ বছর ধরে এই কলোনি খালি পরে আছে। আরে বন্ধু তুমি আউট সাইডার, আমি তো এখানকার , কোলকাতায় থাকি। আমাকে উল্লু বানানোর চেষ্টা করছো ?

বিজয়: তুই ভুল খবর জানিস। তুই চল না , তোকে আমার রুম দেখাচ্ছি।

আরো দেখুন : পুতুলের অভিশাপ  https://youtu.be/apU8HlnXeqo

**দৃশ্য: ৭**

মোহন চারিদিক ভালো করে দেখতে থাক। বিজয় মোহনকে নয় ৩ নম্বর ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাঁড়ায়।

বিজয়: এই হলো আমার ফ্লাট। চল ভেতরে চল।

মোহন ফ্ল্যাটের ভেতরে যায় , দেখে পুরো ফ্লাটটাই খুবই নোংরা বহুদিন পরিস্ক্রা না করলে যেমন হয় । চারিদিকে মাকড়সার জালে ভরা, সিলিং থেকে দেওয়াল সব জায়গায় কালো হয়ে রয়েছে। ঘরের মেঝে নোংরা ময়লায ঢেকে রয়েছে।

মোহন: বিজয় ইয়ার্কি টা তুমি বেশ ভালোই পারো , এই ঘরের অবস্থা দেখতে পাচ্ছ ? এই ফ্ল্যাটের এমন খারাপ অবস্থা যে এখানে মানুষ তো দূরের কথা জংলী জানোয়াররাও থাকতে পারবে না। আর তুমি বলছো যে তুমি এই রুমে থাকো ?

বিজয়: (উদ্বিগ্ন) না, আমি এখানে থাকি। দিশা নামের মেয়েটি আমাকে এখানে থাকতে দিয়েছে।

মোহন: (চিৎকার করে) দিশা? এখানে তো কেউ থাকে না! তুই পাগল হয়ে গেছিস।

বিজয়: নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছি না। মিথ্যে বলছি না ইয়ার, গত এক বছর ধরে আমি এই ফ্ল্যাটেই থেকে আসছি। এখন ফ্ল্যাটটা যেমন দেখছো , ফ্লাট টা একেবারেই এমন দেখতে ছিল না। আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না , কয়েকঘন্টা আগে আমি যখন এখান থেকে কোচিংএ গেলাম , তখন এটা মোটেই এমন ছিল না। কয়েক ঘন্টায় এই ফ্লাটটার অবস্থা এমন কিকরে হলো ? একদিমই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঘর ছিল এটা। দিশা ফ্ল্যাটের খুবই যত্ন করে।

 

মোহন: কোথায় তোর দিশা , দেখতে তো পাচ্ছি না। তুই তো বলছিলি তোর রুমেই থাকে

তাহলে কোথায় গেলো দিশা। আরে এইরকম রুমে কোনো মেয়ে থাকে নাকি ? তোর মানসিক সমস্যা হয়নিতো ? এখনো সত্যি সত্যি বল, তুই আমার সাথে ইয়ার্কি করছিস তাইনা ?

বিজয়: আরে আমারি তো মাথা ঠিকমতো কাজ করছে না , আমি এসব কি দেখছি।

বিজয়ের কথা শেষ হতেই এই ফ্ল্যাটের একমাত্র বাল্ব আচমকাই ফ্লাকচুয়েট হতে শুরু করে, হটাৎই একটা দমকা ঠান্ডা হাওয়া ওদের শরীর ছুঁয়ে চলে যায়। রুমের ভেতরে থাকতে কেমন অস্সস্তি হতে শুরু করে। ভেতরের রুমের দরজায় খট খট আওয়াজ সোনা যায়।

বিজয়: মনে হয় পাশের রুমে আছে দিশা। চল দেখে আসি।

আরো দেখুন :রাট তখন আড়াইটে https://youtu.be/jdieP1gBN1Q

**দৃশ্য: ৮**

বিজয় আর মোহন ভেতরের রুমে গিয়ে দেখে একই অবস্থা , নোংরা , চারিদিকে মাকড়সার জাল , কালো দাগে ভরা ওয়াল। তখনি বাইরের দরজায় খট খট আওয়াজ শুনতে পায়। বিজয় অবাক হয়ে ওর বন্ধুকে নিয়ে বাইরের রুমে আসে, তখনি আবার ভেতরের দরজায় খট খট আওয়াজ শুনতে পায়।

মোহন: ভাই আমার মনে হয় আমাদের এখন থেকে এখনই চলে যাওয়া উচিত। এখানে আমার কিছুই ঠিক লাগছে না। তোর কিছু তো ভুল হয়েছে। আমার কথা শোন্ , তুই কিছুদিনের জন্য নিজের বাড়ি ঘুরে আয় , তোর অবস্থা ভালো না , এমন অবস্থায় এখানে থাকা ঠিক হবে না।

বিজয়: একমিনিট দ্বারা, সকালেই দিশা আমাকে টিফিন প্যাক করে দিয়েছিলো। কিন্ত আমি টিফিন নিয়ে যেতে ভুলে গেছি। এখনো ওই টিফিন কিচেনেই পরে আছে হয়তো, দ্বারা।

আরো দেখুন :নিশি রাতের আতঙ্ক  https://youtu.be/jdieP1gBN1Q

দৃশ্য: ৯

(বিজয় দৌড়ে রান্না ঘরে যায়, গিয়ে দেখে ওখানে সত্যি একটা টিফিন বাক্স পরে আছে।}

বিজয়: এইদ্যাখ, আমি বলেছিলাম না , এইদাখ আমার টিফিন।

তুই এটা খুলে দেখ এর মধ্যে পাস্তা পাবি।

(মোহন টিফিন বাক্স টা খুলেই চমকে যায়। টিফিন বক্সের ভেতর থেকে বিশ্রী গন্ধ বেরোতে থাকে, পচা খাবারের মধ্যে ছোট ছোট অজস্র পোকা নড়তে দেখা যায়। )

বিজয়: আচ্ছা চল পাশের ফ্ল্যাটের লোকগুলোকে জিজ্ঞাসা করে দেখি।

(বিজয় আর মোহন পাশের প্রতিটি ফ্লাট ঘিরে ঘিরে দেখে , কিন্তু সবকটা ফ্ল্যাটেই একই দশা। সবকটা ফ্লাটই ফাঁকা, নোংরা আর দুর্গন্ধ ছাড়া কিছুই নেই। )

 

 

বিজয়: এবার তোকে আমি কিভাবে বিশ্বাস করবো? আমি মিথ্যে বলছি না। কিন্তু আমি এতটাও বোকা না যে কেউ আমাকে এমনভাবে বোকা বানাতে পারবে। তুই দ্বারা ঐযে সামনের ফ্লাটটাতে একটা লোক আছে, বারান্দায় আমি আর দিশা যখন গল্প করি তখন একদৃষ্টে আমাদেরদিকে তাকিয়ে থাকে। তুই চল , ও যদি বলে তাহলে তুই তো বিশ্বাস করবি যে আমি আর দিশা এই ফ্ল্যাটে থাকি।

আরো দেখুন : আদল বদল https://youtu.be/kF8y-XpR0rY

**দৃশ্য: ১০**

(বিজয়ের মন রাখার জন্য মোহন বিজয়ের সাথে সামনের কলোনিতে গিয়ে একটা ফ্ল্যাটের দরজায় টোকা মারতে থাকে। কিছুক্ষন পরে একজন শ্যামলা রঙের গোঁফওয়ালা লোক দরজা খোলে। )

বিজয়: হা ইনিই, স্যার ….. স্যার সত্যিকরে বলবেন স্যার , আপনি আমাকে চেনেন ?

বিজয়ের কথা শুনে ওই লোকটা বিজয়কে পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার ভালো করে দেখে।

মোহন: বলুন না স্যার , ডিস্ ইস ভেরি ইম্পরট্যান্ট।

বিজয়: যিনি লজ্জা পাচ্ছে এটা শিকার করতে যে রোজ ইনি আমাদেরকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো

লোক: আরে পাগল নাকি তুমি ? আজপর্যন্ত তো আমার কেবল সন্দেহ ছিল , কিন্তু আজ পরিষ্কার হয়ে গেল যে তুমি একটা বদ্ধ পাগল। এই ছেলেটা, ওই যে সামনে খালি ফ্লাট টা আছে না , ওখানে ছাদে বসে একা একা বকবক করতো। এমন আচরণ করতো যেন কারো সাথে বসে গল্প করছে। একা একাই হস্ত, বকবক করতো। অনেকবার তো আমারদিকে তাকিয়ে রগে গজগজ করতে করতে নিচে চলে যেত। আমার তো একে কোনো পাগল মনে হতো। নাহলে ওই খালি ভুতুড়ে ফ্ল্যাটের ছাদে কি করতে যেত কে জানে।

বিজয়: (রেগে গিয়ে) চুপ করুন । মিথ্যে বলছে এ। আপনি আমাকে দেখেছেন , কিন্তু দিশাকে দেখেন নি ? আমি রোজি ওর সাথে ছাদে যেতাম

লোক: (মোহনের দিকে তাকিয়ে) অরে ভাই এর চিকিৎসা করাও।

মোহন: বিজয় ….. দিশা বলে কেউ নেই , আজপর্যন্ত কেউই ওকে দেখেনি। নিজেকে সামলা বন্ধু । এনিয়ে যতই ভাববি ততই কষ্ট পাবি। দেখ আমি তোর বন্ধু , তোর খারাপ চাইবো না। তুই এখন কিছুদিনের জন্য নিজের বাড়ি চলে যা। আর বাড়ি গিয়ে তোর নিজের ফ্যামিলিকে সব সত্যি কথা বলবি। এতদিন তুই যা দেখেছি ওগুলো সত্যি না , ওগুলো শুধু মায়া ছিল। আমরা তোর শত্রু না , আর এই আঙ্কেল মিথ্যে বলছে না , উনি যেটা দেখেছেন সেটাই বলছেন ,

(বিজয় বুঝতে পারছিলো না ,ও যেটা দেখছে সেটা মিথ্যে নাকি গত একবছর ধরে যেটা দেখছে সেটা মিথ্যে। গত আদবছর ধরে ও যা যা করেছে সবই মিথ্যে,ও একটা ঘরের মধ্যে কাটাচ্ছিল , এটা মেনে নেওয়া বিজয়ের পক্ষ্যে খুবই কষ্টকর ছিল। )

 

মোহন: তুই এক কাজ কর, আমার সাথে আমার বাড়ি চল , ওখান থেকেই আগামীকাল নিজের বাড়ি চলে যাবি।

আরো দেখুন : শেষ যাত্রা https://youtu.be/QGyYSwuBWuI

**দৃশ্য: ১১**

(বিজয় মোহনের কোথায় রাজি হয় , মোহন বিজয়কে সঙ্গে করে নিজের বাড়ি নিয়ে আসে। পরেরদিনই মোহন বিজয়কে ওর শহরে যাবার বসে উঠিয়ে দেয়। বিজয় নিজের বাড়ি চলে আসে কিন্তু সবসময়ে দিশার কথা ভাবতে থাকে। বিজয় একমাস হলো বাড়িতে এসেছে। ওর বাড়ির লোক ওকে বোঝাতে বোঝাতে হাপিয়ে উঠেছে যে দিশা কেবল ওর মনের ভুল আর কিছুই না।

আরো দেখুন :দরজার আড়ালে https://youtu.be/lnUZbt8bq2E

**দৃশ্য: ১২**

আজ সেই দিন ছিল যেইদিন ও দিশার সাথে বাস স্ট্যান্ডে পরিচয় হয়েছিল। আজ দিশার কথা ওর খুব মনে পড়ছিলো। বিজয়ের মনে হচ্ছিলো দিশা বোধহয় ওকে ডাকছে। ও উঠে জানালার সামনে যায়। কিন্তু কাউকেই দেখতে পায়না। হটাৎই চাঁদের ওপর থেকে ও দিশার ডাকের আওয়াজ শুনতে পায়।

বিজয় পাগলের মতো দৌড়ে ছাদের ওপর যায় আর দেখে সামনে দিশা দাঁড়িয়ে আছে আর ওকে দেখে হাসছে। বিজয় আনন্দে ওর হাত চেপে ধরে।

বিজয়: তুমি এসে গেছো দিশা , আমি জানি তুমি আছো। তুমি কোথায় চলে গেছিলে আমাকে ছেড়ে । চলো সবার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দি। বিজয়ের কথা শুনে দিশা বিজয়ের হাত ছেড়ে দেয়। আর ধীরে ধীরে পেছোতে থাকে। পেছোতে পেছোতে দিশা ছাদ থেকে পরে যায়। আর তক্ষনি বিজয়ের ঘুম ভেঙে যায়।

এতদিন বাদে দিশাকে স্বপ্নে দেখলাম? এ কি হচ্ছে?

বিজয়ের আওয়াজ শুনে ওর মা ওর ঘরে আসে।

মা: কিহলো ? বাজে স্বপ্ন দেখেছিস নাকি ?

বিজয়: আমি ঠিক আছি মা, তুমি গিয়ে শুয়ে পর।

মা: আমি পরিষ্কার শুনেছি তুই দিশা বলে চেঁচিয়ে উঠেছিলি। নিশ্চই ওই ভুতনিটা তোর স্বপ্নে এসেছিলো ?

আরো দেখুন :শেষ রাতের ট্রেন https://youtu.be/lHJINJYXkkk

**দৃশ্য: ১৩ **

পরেরদিন সকালে

মা: তোর জন্য একটা সম্বন্ধ এসেছে বর্ধমান থেকে। আমার তো বেশ ভালোই লেগেছে। তুই একবার দেখে বলতো তোর পছন্দ কিনা ? আর দেখা বাবা তুই যদি সামনের ভবিষ্যতের দিকে না এগোস তাহলে তোকে অতীত এভাবেই যন্ত্রনা দেবে।

বিজয়: ঠিক আছে মা , তুমি যেটা ভালো বুঝবা

আরো দেখুন : নৈহাটির সেই কালীবাড়ি  https://youtu.be/r4JapjgDw9c

**দৃশ্য:১৪**

খুব শীঘ্রই বিজয় পুরো ফ্যামিলি প্রীতির বাড়িতে যায় বিয়ের ফাইনাল কথাবার্তা বলতে।

মেয়ের মা: যা মা বিজয়কে বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখিয়ে নিয়ে আয়।

প্রীতি বিজয়কে ওপরের ঘর দেখতে নিয়ে যায়। ওপরে গিয়ে একটা ছবি দেখে বিজয় পা কাঁপতে শুরু করে।

প্রীতি: আরে কি হলো ? ইটা আমার দিদি দিশার ছবি। ৫ বছর আগে কলকাতা গেছিলো পড়াশুনা করতে , ওখানে একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক হয় , ছেলেটা ওকে ঢোকা দিয়ে চলে যায়। দিদি ওর জন্য অপেক্ষা করে করে যখন আর ছেলেটা আসে না তখন হতাশ হয়ে আত্মহত্য করে।

বিজয়: (হতবম্ব ) মারা …. মারা গেছে , কবে?

প্রীতি: ৪ বছর আগে। কিন্তু মনে হয় যেন ও আমাদের আশেপাশেই আছে। আমি আমার দিদিকে অনুভব করতে পারি।

কিহলো ? আপনি ঠিক আছেন তো?

বিজয়: প্লিজ নিচে চলুন। আমার কিছু ঠিক লাগছে না।

আরো দেখুন : আজিমগঞ্জের আতঙ্ক  https://youtu.be/oCWpeG6DOsA

**দৃশ্য: ১৫**

ভাগ্য বা যেকোনো কারণেই হোক প্রীতির সাথেই বিজয় বিয়ে ঠিক হয়। বিজয়েরখুবই অস্সস্তি হয় কিন্তু তবুও কাউকে কিছু বলতে পারছিলো না। আর বললেও বা কেই বা বিশ্বাস করতো বিজয়ের কথা।

**শেষ দৃশ্য: ১৬ **

তারপর একদিন বিয়ের দিন চলে এলো। ফুলসজ্জারদিন প্রীতি বউ বেসে সেজে গুঁজে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বিজয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলো।  তারপর বিজয় ঘরে আসে। বিজয় প্রীতির ঘোমটা তোলে

দিশা: আমি বলেছিলাম না জান , আমি তোমার সঙ্গে কখনোই ছাড়বো ন। যেকোনো সীমানা পার করতে রাজ্ই আছি। অনেকদিন অপেক্ষা করিয়েছো তুমি। আর কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না। (হাসি )

এইবলে দিশা জোরে জোরে হাসতে থাকে। বিজয়ের চিনতে দেরি হয়না দিশাকে। দিশার চোখের মনি ধীরে ধীরে সাদা হয়। ধীরে ধীরে বিজয়ের দিকে এগোতে থাকে। আর বিজয় কাঁপতে কাঁপতে জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পরে।

*****শেষ*****

 

আরো দেখুন : নিশি রাতের আতঙ্ক ˆ https://youtu.be/jdieP1gBN1Q

আরো দেখুন : এই ওয়েব সিরিজটি নির্লজ্জতার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি আপনার সন্তানদের সামনে দেখবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *