Bengali Suspense Horror Story : বাংলা সাসপেন্স হরর স্টোরি
Bengali Suspense Horror Story : বাংলা সাসপেন্স হরর স্টোরি
গল্প – অদ্ভুত আয়না
লেখক – DK

Bengali Suspense Horror Story: দৃশ্য ১: বাড়ির সামনে
(বাড়ির চারপাশে হাওয়ার মৃদু শব্দ, রাতের আঁধার গভীর এবং ভৌতিক পরিবেশ)
অরূপ: (শ্বাস চেপে, অস্থির কণ্ঠে) “মেঘনা, এখানে আসার সিদ্ধান্তটা ঠিক হলো তো? চারদিকে এত নির্জন আর অদ্ভুত লাগছে!”
মেঘনা: (চোখের কোণে রহস্যময় হাসি) “তুমি কি জানো, অরূপ? দাদু বলতেন, এই বাড়ির দরজার ওপারে এমন কিছু সত্য লুকিয়ে আছে যা আমাদের কল্পনারও বাইরে।”
অরূপ: (চমকে) “কী বলতে চাইছো? এমন কী আছে এখানে?”
মেঘনা: (চোখ সরিয়ে) “তিনি বলতেন, এই বাড়ি শুধু ইট-কাঠের নয়, এটা একটা জীবন্ত চরিত্র, যা আমাদের সত্যিকারের মুখোশ উন্মোচন করে। চলো, এবার নিজের চোখে দেখে আসি।”
দৃশ্য ২: বাড়ির ভেতরে প্রবেশ
অরূপ: (চারপাশে তাকিয়ে) “এখানে এত অন্ধকার কেন? সবকিছু এত স্থির কেন মনে হচ্ছে?”
মেঘনা: “বাড়ি পুরনো, তাই এমন দেখাচ্ছে। তুমি ভয় পাচ্ছো না তো?”
অরূপ: (মৃদু হেসে) “তুমি আমার পাশে থাকলে, ভয় পাব কেন? কিন্তু এটা ঠিক, বাড়িটা অদ্ভুত।”
দৃশ্য ৩: দোতলায় ওঠা
মেঘনা: (ফিসফিস করে) “শুনছো? এই শব্দটা কেমন অদ্ভুত লাগছে!”
অরূপ: “হ্যাঁ, মনে হচ্ছে কেউ আমাদের পেছনে হাঁটছে। কিন্তু চারপাশে তো কেউ নেই।”
মেঘনা: “এটা আমাদের কল্পনা হতে পারে। কিন্তু তাও সাবধান থাকি।”
দৃশ্য ৪: দাদুর ঘরে আয়নার সামনে
মেঘনা: “এই আয়নাটা দাদুর সময়ের। তিনি বলতেন, এই আয়না সত্যি ও মিথ্যার প্রতিচ্ছবি দেখায়।”
অরূপ: (আয়নার দিকে তাকিয়ে) “এত বড় আয়না আমি আগে দেখিনি। কিন্তু এর ভেতরে যেন কিছু নড়ছে!”
মেয়ে: (নরম গলায়) “তোমরা অবশেষে এলে। আমি জানতাম, তোমরা আসবে।”
মেঘনা: (চমকে) “তুমি কে? এখানে কী করছো?”
মেয়ে: “আমি এই বাড়ির এক অভিশপ্ত আত্মা। অনেকদিন আগে এখানে থাকতাম। তোমাদের ভালোবাসা কতটা সত্যি, তা পরীক্ষা করতেই আমি এখানে।”
অরূপ: “আমাদের ভালোবাসার সাথে তোমার কী সম্পর্ক?”
মেয়ে: “এই বাড়িতে মিথ্যার কোনো স্থান নেই। যদি তোমাদের ভালোবাসা সত্যি হয়, তবে তোমরা মুক্তি পাবে। আর যদি মিথ্যে হয়, এই বাড়ি তোমাদের চিরস্থায়ী কারাগার হয়ে যাবে।”
দৃশ্য ৫: আয়নার রহস্য
মেঘনা: (চোখ বড় করে) “অরূপ, এগুলো আমাদের স্মৃতি!”
অরূপ: (অবাক হয়ে) “কিন্তু এসব এখানে কেন? তুমি কি কিছু লুকিয়েছো, মেঘনা?”
মেঘনা: (চোখ নামিয়ে) “হ্যাঁ, অরূপ। আমি তোমাকে বলিনি, কারণ আমি ভয় পেয়েছিলাম।”
মেয়ে: “তোমাদের ভালোবাসার সত্যতা প্রকাশ করার সময় এসেছে। যে সাহস করবে, তার সত্যি এখানে প্রকাশ পাবে।”
দৃশ্য ৬: মেঘনা ও অরূপের স্বীকারোক্তি
মেয়ে: “এই দোলনায় যে বসবে, তার হৃদয়ের সত্যি প্রকাশ পাবে। কিন্তু আগে মেঘনা, তোমার ভেতরের গোপন সত্য প্রকাশ করো।”
মেঘনা: (কাঁপা গলায়) “আমি… আমি অনেকদিন আগে এক ভুল করেছিলাম। অরূপ, তোমার সঙ্গে সম্পর্কের শুরুতে আমি তোমার প্রতি পুরোপুরি সৎ ছিলাম না। কিন্তু আমি কখনো তোমাকে আঘাত করতে চাইনি।”
অরূপ: (অবাক হয়ে) “কী বলছো, মেঘনা? তুমি কী লুকিয়েছিলে?”
মেঘনা: “আমার একজন পুরনো বন্ধুর সাথে যোগাযোগ ছিল, যেটা আমি তোমাকে বলিনি। আমি ভেবেছিলাম, বললে তুমি কষ্ট পাবে। কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি, অরূপ। সবসময় ভালোবেসেছি।”
মেয়ে: “তোমার সাহসিকতাই প্রমাণ করে যে তুমি সত্যি বলছো। কিন্তু এখন অরূপ, তোমার পালা। তোমার ভালোবাসার সত্যি প্রমাণ করো।”
অরূপ: (মাথা নিচু করে) “হ্যাঁ, আমিও সত্য লুকিয়েছিলাম। মেঘনা, যখন তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, তখন আমি ভেবেছিলাম এই সম্পর্ক হয়তো টিকবে না। তাই আমি অন্য একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু পরে বুঝতে পারি, তোমার ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য। আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে পারিনি।”
মেঘনা: (অবাক হয়ে) “তুমি এসব কখনো বলনি, অরূপ। কিন্তু আমি খুশি যে তুমি এখানে আছো।”
মেয়ে: “তোমাদের সাহসিকতা ও স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে যে তোমাদের ভালোবাসা সত্যি। এখন দোলনায় বসে এই পরীক্ষা শেষ করো।”
অরূপ: “আমি বসব। আমি প্রমাণ করব, আমাদের ভালোবাসা সত্যি।”
মেঘনা: (অরূপকে ধরে) “না, অরূপ! আমি তোমাকে হারাতে পারব না।”
অরূপ: “মেঘনা, যদি আমাদের ভালোবাসা সত্যি হয়, তবে কোনো কিছুই আমাদের আলাদা করতে পারবে না। আমি প্রস্তুত।”
দৃশ্য ৭: চূড়ান্ত পরীক্ষা
দৃশ্য ৭: চূড়ান্ত পরীক্ষা (সাসপেন্স বাড়ানো)
(আলো গাঢ় হয়ে যায়, চারপাশ থেকে অদ্ভুত গুঞ্জন শোনা যায়। দোলনা আরও জোরে দুলতে শুরু করে)
মেঘনা: (আতঙ্কিত হয়ে) “অরূপ! দোলনাটা এমন দুলছে কেন? এটা যেন আমাদের টেনে নিচ্ছে!”
মেয়ে: “এই দোলনা শুধু সত্যি গ্রহণ করে। মিথ্যা হলে, এটি তোমাদের নিয়ে যাবে এমন এক জগতে, যেখানে চিরকাল শুধু অন্ধকার থাকবে।”
অরূপ: (শ্বাস চেপে) “আমাদের ভালোবাসা সত্যি। কোনো কিছুই আমাদের আলাদা করতে পারবে না।”
মেঘনা: (কাঁপা গলায়) “অরূপ, তুমি নিশ্চিত তো? যদি আমরা ব্যর্থ হই?”
অরূপ: “মেঘনা, তুমি আমার জীবনের আলো। আমরা একসঙ্গে লড়াই করব।”
(দোলনা হঠাৎ থেমে যায়। আলো এক মুহূর্তের জন্য নিভে যায়। মেঘনা ও অরূপ চারপাশে তাকিয়ে এক অদ্ভুত জগতের মধ্যে নিজেদের আবিষ্কার করে)
মেঘনা: “এটা… এটা কোথায়? আমরা বাড়ির ভেতরে তো ছিলাম!”
মেয়ে: “এটাই শেষ ধাপ। এখানে তোমাদের হৃদয়ের গভীরতম ইচ্ছা ও মিথ্যা প্রকাশ পাবে। যদি কোনো লুকানো মিথ্যা থাকে, তা এখানেই ধ্বংস হবে।”
অরূপ: (আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে) “মেঘনা, আমি তোমাকে বলিনি, ছোটবেলায় আমি এই বাড়িতে এসেছিলাম। তখনই আমি শুনেছিলাম, এখানে অভিশাপ আছে। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম, সেটা মিথ্যে।”
আরও পড়ুন: এই ওয়েব সিরিজটি নির্লজ্জতার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি আপনার সন্তানদের সামনে দেখবেন না।
মেঘনা: (অবাক হয়ে) “তুমি এখানে আগে এসেছিলে? কেন তুমি এটা লুকিয়েছিলে, অরূপ?”
অরূপ: “আমি ভয় পেয়েছিলাম, মেঘনা। ভেবেছিলাম, যদি জানো, তুমি এখানে আসতে চাও না। কিন্তু আমি জানি, সত্য সবসময়ই মুক্তি দেয়। আমি ভুল করেছিলাম।”
মেঘনা: “আমরা একসঙ্গে সব ঠিক করব, অরূপ। ভালোবাসাই আমাদের শক্তি।”
(আয়নায় হঠাৎ করে মেঘনার ও অরূপের একসঙ্গে হাসিমুখে ছবি ফুটে ওঠে। মেয়েটি ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায়)
মেয়ে: “তোমাদের ভালোবাসা সত্যি। অভিশাপ শেষ হলো। এখন মুক্তি পাও।”
(বাড়ির চারপাশে আলো ঝলমল করতে শুরু করে, দোলনা থেমে যায়। বাড়িটি ধীরে ধীরে একটি সুন্দর এবং শান্ত পরিবেশে পরিণত হয়)
মেঘনা: (অরূপের হাত ধরে) “আমাদের ভালোবাসাই এই বাড়ির অভিশাপ ভেঙেছে।”
অরূপ: “তুমি আমার সত্য। আর কোনো কিছুই আমাদের আলাদা করতে পারবে না।”
(দূর থেকে একটি পাখির গান শোনা যায়। গল্প শেষ হয়)
আরও পড়ুন: ভুতের গল্প, সংলাপ আকারে