Chattogram’s University News: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু উপাচার্যের পদত্যাগ, বিপ্লবের নামে নিপীড়ন?
Chattogram’s University News: বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু শিক্ষক-কর্মচারীদের পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগও উঠেছে। এই পরিবেশে চট্টগ্রামে হিন্দু উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। বন্দরনগরীর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত।
মৌলবাদীরা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নানাভাবে নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বিপ্লবের নামে এখন সেখানে অন্যায় বিক্ষোভ চলছে। এসব ঘটনায় সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এদিকে বিভিন্ন স্থানে হিন্দু শিক্ষক-কর্মচারীদের জোরপূর্বক পদত্যাগের অভিযোগ উঠেছে। এই পরিবেশে চট্টগ্রামে হিন্দু উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। বাংলাদেশের বন্দর নগরীর অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। অভিযোগ ছিল উপাচার্য ড. অনুপম সেন ইসকনের অনুসারী। অবশেষে শুক্রবার পদত্যাগ করলেন এই আবে। তিনি ছাড়াও সন্ধ্যায় প্রো-উপাচার্য কাজী শামীম সুলতানা ও কোষাধ্যক্ষ তৌফিক সাঈদ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন: গরুর মাংস নিষিদ্ধ করার আহ্বান বাড়ছে, অন্যান্য রাজ্য কি আসামের পথ অনুসরণ করবে?
প্রতিবেদনে বলা হয়, বার্ধক্যজনিত কারণে উপাচার্য, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে সহযোগী উপাচার্য এবং ব্যক্তিগত কারণে কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেছেন। এর আগে ইসকনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে চট্টগ্রামের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক হিন্দু ছাত্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। অভিযোগ, ঘটনার সময় বরখাস্ত ছাত্র চট্টগ্রাম আদালতের সামনে ছিলেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক কুশল বরণ চক্রবর্তী চরমপন্থীদের হামলায় আহত হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিনটি ক্যাম্পাসের গেটে তালা ঝুলিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি’র ব্যানারে এ বিক্ষোভ চলছিল। আন্দোলনকারীদের দাবি, রাত ৮টার মধ্যে ওই তিন শিক্ষক পদত্যাগ না করলে আগামীকাল শনিবার কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর ওই তিন শিক্ষক পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
আরো পড়ুন: ‘যেখানে নমাজ পড়বে, সেটাই ওয়াকফ সম্পত্তি’, বললেন কল্যাণ, BJP বলল ‘বাংলাদেশের…’
গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নৃশংসতার অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনা চলে যাওয়ার পর থেকে মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বিএনপি-জামায়াতকে ‘আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখেছিলেন। তবে কয়েক মাস পর সে দেশের হিন্দুদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ধর্মের নামে সংখ্যালঘুদের চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ধর্মান্তরের অভিযোগও উঠেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংসতার অভিযোগ খোদ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।
হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুকে গ্রেপ্তারকে ঘিরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এদিকে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বাংলাদেশে কট্টরপন্থীরা রাস্তায় নেমেছে। ‘জুলাই বিপ্লব’-এর ছাত্রনেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। সরজিস আলম সম্প্রতি চট্টগ্রামে ইসকন ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন। এই পরিবেশে মানুষ ভারতের রাস্তায় নেমেছে। বাংলাদেশী মৌলবাদের বিরুদ্ধে এখানে স্লোগান উঠেছে। অন্যদিকে ভারত সরকারও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বেশ কিছু বিবৃতি দিয়েছে।
আরো পড়ুন: হায়দরাবাদে আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, ‘পুষ্প 2’ প্রিমিয়ারে মহিলার মৃত্যুর পরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। সেই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। ওই সমাবেশে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেন বলে অভিযোগ। এ অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খান বাদী হয়ে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নেতা। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত ২৬ নভেম্বর হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক সদস্য চট্টগ্রাম আদালতের বাইরে জড়ো হন। পুলিশ নির্বিচারে জনতাকে লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। এদিকে সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৮ হিন্দুকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে মামলা না লড়তে সতর্ক করা হয়েছে।