Humanity Still Alive: ‘মনুষ্যত্ব এখনও বেঁচে…’! নিজের পথখরচের টাকা থেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ২০৮ টাকা দিলেন ঢাকি, চোখে জল নিয়ে কী লিখলেন কিঞ্জল?
Humanity Still Alive: ‘মনুষ্যত্ব এখনও বেঁচে…’! নিজের পথখরচের টাকা থেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ২০৮ টাকা দিলেন ঢাকি, চোখে জল নিয়ে কী লিখলেন কিঞ্জল?
Humanity Still Alive: ‘মানুষের মনুষ্যত্ব উদযাপন হোক আসল উৎসব’, ঢাকির দেওয়া টাকা হাতে তুলে নিলেন কিঞ্জলরা! দিলেন ধন্যবাদ
আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা যেন রাজ্যবাসীকে অন্তর থেকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ-আন্দোলন। ন্যায় বিচারের জন্য সকল স্তরের মানুষ এক হয়েছেন। যে যেমনভাবে পারছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাদের আন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এবার এক ঢাকি এমনভাবে জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়ালেন, যা চোখে জল আনল সকলের।
সবে মিটেছে দুর্গাপুজো। তবে এমন পুজো বোধ হয় কলকাতা আগে দেখেনি। একদিকে যখন মণ্ডপে মণ্ডপে থিকথিক করছে দর্শনার্থীদের ভিড়, ঠিক তখনই শহরের অন্য প্রান্তে ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসে জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই অনশন মঞ্চে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কত কত মানুষ যে পুজোর উৎসব ছেড়ে চিকিৎসকদের দ্রোহ উৎসবে যোগ দিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই।
আরো পড়ুন: আন্দোলনরত চিকিৎসক পুলিশের হাতে ধরা পড়ল, এ বার চিকিৎসকদের এক শর্ত, প্রবল চাপে পুরসভা
এমনই সময় সামনে এল একটি ঘটনা। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। সেখানে দেখা যাচ্ছে অনুপ ঘোষাল নামে এক ব্যক্তির একটি পোস্ট। সেই পোস্টে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, এক ঢাকি তাঁর অর্জিত অর্থ থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জন্য তাঁর হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন।
বুধবারই জানা গিয়েছিল এক পাড়ার পুজোয় আসা এক ঢাকি সেখানকার উদ্যোক্তার হাতে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের জন্য তাঁর প্রাপ্য টাকার কিছু অংশ দান করে গিয়েছেন। এদিন সেই অর্থই হাতে তুলে নিলেন কিঞ্জলরা।
কী জানালেন কিঞ্জল নন্দ?
গতকাল অর্থাৎ বুধবার, ১৬ অক্টোবর অনুপ ঘোষাল নামক এক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান তাঁর পাড়ার পুজোয় যে ঢাকি ঢাক বাজিয়েছেন তিনি গাড়ি ভাড়া বাবদ সামান্য কিছু অর্থ রেখে পথ খরচ হিসেবে যে বখশিস পেয়েছেন সেটার বাকিটা জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে দিয়ে দেওয়ার জন্য দেন। এরপর এদিন অনুপ ঘোষাল গিয়ে সেই অর্থ তুলে দিয়ে আসেন কিঞ্জল নন্দদের হাতে।
এদিন কিঞ্জল নন্দ সেই অর্থ গ্রহণের পর সেই মুহূর্তের একটি ছবি সহ একটি মন ভালো করে পোস্ট করেন। সেই পোস্টেই কিঞ্জল লেখেন, ‘কথা দিয়েছিলাম, সেই মানুষটির আশীর্বাদ গ্রহণ করলাম, জানি না আপনার মতো নিঃস্বার্থ হয়ে জীবন কাটাতে পারব কিনা, ত্যাগের আদর্শে নিজের জীবনটা উৎসর্গ করতে পারব কিনা, তবে কথা দিচ্ছি আপনার মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করব,বেজে উঠুক আরও এরকম হাজার ঢাক, ছড়িয়ে পড়ুক ভালোবাসা, ছড়িয়ে পড়ুক মনুষ্যত্ব, ছড়িয়ে পড়ুক অন্যায়ের সাথে আপোস না করার উৎসব, কারণ মানুষের মনুষ্যত্ব উদযাপনই হোক আসল উৎসব, প্রণাম।’
আরো পড়ুন: আইনের চোখ আর বাঁধা নয়, তরোয়ালের জায়গায় সংবিধান, সুপ্রিম কোর্টে বসল ‘লেডি অব জাস্টিস’-র নতুন মূর্তি
কে কী বলছেন?
অনেকেই বাহবা জানিয়েছেন এই কাজকে। এক ব্যক্তি লেখেন, ‘আমরাও নতমস্তকে প্রণাম জানালাম, সত্যি এরকম মানুষের দেখা পাওয়া ঈশ্বরের দেখা পাওয়া একই কথা।’ আরেকজন লেখেন, ‘তুমি ও তোমার সমস্ত বন্ধুদের জন্য প্রণাম, ওই মানুষটার জন্যও প্রণাম ও শ্রদ্ধা।’ তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, ‘একই জিনিস এবার আমার পাড়ার পুজোতে আসা ঢাকি ভাইরাও (বাগনান থেকে আসে, আমার বাসে গেল এবার) বলল, এবার আর খরচ নিবোনি, কি হবে নিয়ে স্যার?’ চতুর্থ ব্যক্তি লেখেন, ‘আমরা কত সামান্যতেই ঢাক বাজিয়ে ফেলি!
আর যে মানুষটা সত্যিই ঢাক বাজিয়ে পেট চালান, কী নিঃশব্দে হাত বাড়িয়ে দেন! পরজন্ম বলে কিছু হয় না জানি, তবু খুব সাধ হয় এমন একজন মানুষ হয়ে জন্মানোর। প্রণাম রইল আভূমি।’ পঞ্চম ব্যক্তি লেখেন, ‘অনুপ বাবু আজকে আপনাকে দেখলাম, ডাক্তার বাবুদের সেই ঢাকির দেওয়া ভালোবাসার স্পর্শ মঞ্চে পৌঁছে দিলেন, ডাক্তার বাবুরা প্রণাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রহণ করলেন।’