Mamata Banerjee: হঠাৎ করে ভোটের হার বাড়ল কী করে? ফারাক্কার বৈঠক থেকে প্রশ্ন তোলেন মমতা

Mamata Banerjee: হঠাৎ করে ভোটের হার বাড়ল কী করে? ফারাক্কার বৈঠক থেকে প্রশ্ন তোলেন মমতা

জাতীয় নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ভোটারদের ভোটার তালিকা ঘোষণা করার পরে, সারা দেশে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির মধ্যে হৈচৈ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে কমিশন জানায়, প্রথম দফায় ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে এর আগে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, দ্বিতীয় দফায় ৬০ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। মালদা (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হানের সমর্থনে বুধবার মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় দ্বিতীয় দফার ভোট কীভাবে হঠাৎ করে 5.75 শতাংশ বেড়ে গেল তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজকের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আগে সব সংবাদ মাধ্যম নির্বাচন কমিশনের ভিত্তিতে ভোটের শতাংশ নিয়ে লিখত। কিন্তু গতরাতে হঠাৎ শুনলাম, যেখানে বিজেপি কম ভোট পেয়েছে, সেখানে হঠাৎ করেই ভোট বেড়েছে। 5.75 শতাংশ জাতীয় নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে নোটিশ জারি করেছে।

তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই কে ইভিএম মেশিন ও এর চিপ তৈরি করেছে, কীভাবে সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, প্রথম দফা ও দ্বিতীয় দফায় কত ভোট পড়েছে, কতজন ভোটার এবং কত মেশিন রয়েছে- এ সন্দেহ দূর করতে। নাগরিকবৃন্দ.”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “প্রায় 19 লক্ষ ইভিএম মেশিন দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি জনগণের ভোট পরিবর্তন করছে এবং তাদের নিজস্ব মেশিন ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এটা আমার সন্দেহ। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের উচিত এই সন্দেহ দূর করা যাতে জনগণ ভোট দেয়। শুধু ‘বিজেপি কমিশন’ হয়ে কোনো লাভ নেই, ভারতের মানুষ নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ কমিশন হিসেবে দেখতে চায়।
অন্যদিকে, আজ প্রখর রোদে সভা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই বক্তব্য বন্ধ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দেখতে পেলেন যে তার কথা শুনতে আসা অনেকেই “হ্যাঙ্গার” এর নীচে আশ্রয় পাচ্ছেন না। তাদের “হ্যাঙ্গার” এর নীচে সাজানোর পর তিনি তার বক্তব্য পুনরায় শুরু করেন।
আজকের সভা থেকে মুর্শিদাবাদের বিড়ি শ্রমিকদের বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “বিড়ি শ্রমিকরা আগে কিছুই পেতেন না। কিন্তু এখন যা পান তা কিছুই নয়। নির্বাচনের পর আমি রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীকে বলব সবার সঙ্গে কথা বলে কিছু করতে।”

প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের বিডি কর্মীরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যদিও তা এখনও কার্যকর না হওয়ায় ব্যালট বাক্সে যাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হয় সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী আজ এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। জঙ্গিপুর মহকুমায় প্রায় 8 লক্ষ বিড়ি শ্রমিক রয়েছে।
ফারাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলামকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী জেলার কিছু বিড়ি কোম্পানির মালিককে শুধুমাত্র বিড়ি শ্রমিকদের জন্য একটি হাসপাতাল তৈরি করার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে 100 শয্যার হাসপাতাল তৈরি হলে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।
ফারাক্কার বুকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ফরাক্কা ব্যারেজ যখন তৈরি হয়েছিল, তখন কেন্দ্রীয় সরকার এখানকার মানুষের পুনর্বাসনের জন্য প্রায় 700 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি টাকাও পায়নি৷ ” ফারাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের সময়মতো ড্রেজিং না করায় শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি দেশ, জাতি, সংবিধান বিক্রি করছে। তারাই ঠিক করে কে কি খাবে আর কি পড়বে। যদি তাদের পাঠানো না হয়, এনআরসি জোরপূর্বক সিএএ এবং ইউনিফর্ম সিভিল কোড আইন প্রবর্তন করবে।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “টেলিপ্রম্পটার নেতা” বলে অভিহিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তিনি বলেছিলেন যে তিনি বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন। কিন্তু এই রাজ্যে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়েছে ‘চক্রী খেকো’ বিজেপি। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় চাকরি কেড়ে নিচ্ছে। আর তাদের জন্য রাজ্যে ঢুকে পড়েছে সিপিএম-কংগ্রেস। এই জোটের পক্ষে ভোট মানে বিজেপিকে সমর্থন করা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *