President Donald J. Trump : ঘুরেফিরে সেই পর্ন-কাঁটা! ট্রাম্প – কে হারাতে প্রচারে ঝড় তুলছেন নীল ছবির কুশীলবেরা
President Donald J. Trump: ঘুরেফিরে সেই পর্ন-কাঁটা! ট্রাম্পকে হারাতে প্রচারে ঝড় তুলছেন নীল ছবির কুশীলবেরা
President Donald J. Trump: পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের গুঞ্জন। আর তা ঠেকাতে তিনি নীল ছবির নায়িকাকে অনেক টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। শুধু তাই নয়, ঘুষের বিষয়টি গোপন রাখতে ব্যবসায়িক নথি জাল করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের মুখে আবারও ‘পর্ণ কাঁটা’ বিঁধলেন।
চলতি বছরের ৫ নভেম্বর থেকে আটলান্টিকের দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরু হবে। নির্বাচনের ঠিক আগে থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন পর্ন তারকারা। এ জন্য তারা বিজ্ঞাপনে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করছে। একদল বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস বাড়তি সুবিধা দিতে পারেন।
প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার কুশীলবদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে নীল ছবি পুরোপুরি বন্ধ করে দেবেন ট্রাম্প। নিজের ‘অপকীর্তি’ ঢাকতে নাকি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি। এই বিষয়ে সতর্ক করে রিপাবলিকান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারে ঝড় তুলেছেন তাঁরা।
প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা ওয়েব দুনিয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য ‘#HandsofMyporn’ নামে একটি মঞ্চ তৈরি করেছেন। তারা সেখানে সবাইকে সতর্ক করে বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থী ও তার সহযোগীদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নীল ছবির কুশীলবদের বন্দি করা। এই প্রচারণায় ইতিমধ্যেই দুই মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন পর্ন তারকারা।
আরো পড়ুন: Ind vs China: পূর্ব লাদাখে LAC থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু ভারত ও চিনের
প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের নায়ক এবং নায়িকারা একটি ‘স্পন্দনশীল এবং আনন্দময়’ জীবনের অংশ হিসাবে নীল চলচ্চিত্রকে উল্লেখ করে। এবং তাই তারা আমেরিকান জনগণকে ট্রাম্পের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে ব্যালটে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ভোটের সময় সুস্থ ও স্বাভাবিক দেশ গড়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে বলেছেন তারা।
বার্তা সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পর্ন তারকা সিউক্সি কিউ বলেন, “আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদনের কথা চিন্তা করেন, এটা মেনে নিতে রাজি হন, তাহলে ৫ নভেম্বর আপনাকে ব্যালট বাক্সে জবাব দিতে হবে। দ্বিতীয় কোনো উপায় নেই।”
জ্যোতিষ মতে ১২ টি রাশির কিছু কথা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সরকারি নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। এ জন্য তিনি ‘প্রজেক্ট 2025’-এর কথা বলেছেন। যেখানে পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের নথিতে যারা এটি তৈরি এবং ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের জেল করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন ট্রাম্প অবশ্য ‘প্রকল্প ২০২৫’ থেকে নিজেকে দূরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, এই ইস্যুতে তাঁকে ডেমোক্র্যাটিকেরা নিশানা করতে ছাড়েননি। হ্যারিসের অনুগামীদের কথায়, ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠেরাই প্রকল্প ২০২৫-এর হোতা। আর এর বিচারধারায় সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের।
পর্ন তারকাদের প্রচারণা নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। ইনস্টিটিউট ফর ফ্যামিলি স্টাডিজের মতে, #HandsofMyPorn প্রচারণা মূলত পুরুষদের মধ্যেই পরিচালিত হয়। কারণ মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের নীল ছবি দেখার সম্ভাবনা চারগুণ বেশি।
আমেরিকার নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, লিঙ্গভিত্তিক পরিসংখ্যানে ট্রাম্প সবসময়ই নারীদের চেয়ে বেশি পুরুষ ভোট পেয়েছেন। আর তাই পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনা এবং জর্জিয়ায় প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্র নির্মাতারা আরও প্রচার চালাচ্ছেন। সেখানে কেউ পর্ন দেখতে গেলে স্ক্রিনে একটি ঘোষণা আসে। যাতে ট্রাম্পের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
ব্লু ফিল্মের তারকাদের মধ্যে, সিওক্সি কিউই জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পর্ন দেখার সময় তাকে বলতে শোনা যায়, “আমি জানি তুমি খুব ব্যস্ত। আমি জানি আপনি অন্য কিছু করছেন। এক মিনিট অপেক্ষা করুন যদি করতে চান তাহলে ৫ নভেম্বর ভোট দিন… আনন্দ করুন।”
আমেরিকায় পর্ন নিষিদ্ধ করার চেষ্টা নতুন কিছু নয়। এর আগে ১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান নীল ছবি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন। যদিও তাতে পুরোপুরি সফল হননি তিনি। এ ছবির কুশীলবরা তখন গোপনে অশ্লীল ছবির শুটিং করছিলেন।
অ্যাডাল্ট সিনেমার নায়ক-নায়িকারা অবশ্য এটাকে আমাদের স্বাধীনতার অংশ বলে মনে করেন। রিপাবলিকানরা অবশ্য যৌন শিক্ষার বই নিষিদ্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যাকে তারা প্রচারণায় এগিয়ে এনেছেন। এ ছাড়া ভবিষ্যতে সমকামী বিয়ে বা প্রজনন অধিকারের মতো বিষয়গুলো কমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্ন তারকারা।
আরো পড়ুন: আইনের চোখ আর বাঁধা নয়, তরোয়ালের জায়গায় সংবিধান, সুপ্রিম কোর্টে বসল ‘লেডি অব জাস্টিস’-র নতুন মূর্তি
ট্রাম্প 2016 থেকে 2020 সাল পর্যন্ত আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সাথে সম্পর্কের জন্য প্রবল সমালোচনার সম্মুখীন হন। শুধু তাই নয়, পরে সে দেশের আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে।
পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের আসল নাম স্টেফানি গ্রেগরি ক্লিফোর্ড। আমেরিকার ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে গল্ফের মাঠে একটি ইভেন্টে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় ট্রাম্পের। এর পরই স্টর্মির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। নীল ছবির তারকার সঙ্গে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়ার এক বছরের মাথায় স্লোভানিয়ান মডেল মেলানিয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প-স্টেফানির সম্পর্ক নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কেউ কিছু জানতেনও না। কিন্তু, ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পরই ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে শুরু হয় কাটাছেঁড়া। স্টেফানি ছাড়াও বহু নারীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং যৌন সম্পর্কের কথাও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। সেই সময়ে সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় ওই পর্নস্টারকে।
ট্রাম্পের বহুমুখিতা বিভিন্ন মহলে চর্চা হয়। এ অবস্থায় পর্ন তারকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, স্টেফানির মুখ বন্ধ করতে চান ট্রাম্প। আর তাতে তিনি প্রথম দিকে সফলও হন। এজন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ট্রাম্প স্টেফানির সঙ্গে এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলেননি। স্টেফানির আইনজীবী কিথ ডেভিডসন তার ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনের সাথে কথা বলেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের সিটি ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। এবং ঘটনাটি ঘটেছিল অক্টোবর 2016 সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্টর্মিকে অর্থ প্রদানের জন্য তার ব্যবসায়িক নথি জাল করার অভিযোগও রয়েছে। এই ঘটনায়, 70 বছর বয়সী রিপাবলিকান নেতা আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন যাকে ফৌজদারি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। নিউইয়র্কের একটি আদালত বলেছে যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে।
ট্রাম্প তার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন এবং পরে একজন পর্ন তারকার সাথে সম্পর্কের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এতে তার হয়রানি কমেনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিষয়টি আবারও উঠে আসে। ব্যালট বাক্সে এর প্রভাব পড়বে কি না, তা জানতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।
আরো পড়ুন: DA নিয়ে শুক্রবারেই ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, সরকারি কর্মীদের জন্য সাব-কমিটি তৈরি রাজ্যের